বিষয় | রাষ্ট্রবিজ্ঞান |
অধ্যায় | আন্তর্জাতিক সম্পর্ক |
প্রশ্নমান | ০৮ |
প্রশ্নের ধরন | বর্ণনামূলক |
ক্যাটাগরি | নোটস |
প্রশ্ন: আন্তর্জাতিক সম্পর্কের সংজ্ঞা দাও। আন্তর্জাতিক সম্পর্কের বিকাশের ধারা সংক্ষেপে আলোচনা কর।
উত্তর:
আন্তর্জাতিক সম্পর্কের সংজ্ঞা :
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বা International Relations বলতে আমরা সাধারণ ভাবে বলতে পারি, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক হল এমন একটি বিষয় যা বিভিন্ন রাষ্ট্রের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক, অরাষ্ট্রীয় সংস্থা ও প্রতিষ্ঠান, ক্ষমতা, রাজনৈতিক মতাদর্শ, যুদ্ধ ও শান্তি, আন্তর্জাতিক সংগঠন, জনম প্রচার, বিশ্ববাণিজ্য, সন্ত্রাসবাদ এর মত প্রায় প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা।
বিভিন্ন রাষ্ট্রবিজ্ঞানীরা আন্তর্জাতিক সম্পর্ককে বিভিন্নভাবে সংজ্ঞায়িত করেছেন, নিচে সেগুলি আলোচনা করা হলো-
অধ্যাপক হলজটির মতে, ” আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বলতে দুই বা ততোধিক রাষ্ট্রের মধ্যে গড়ে ওঠা সম্পর্কের পারস্পরিক ক্রিয়া প্রতিক্রিয়া ও পর্যালোচনা করাকে বোঝায়”।
অধ্যাপক পামার ও পারকিনসনের মতে, “ বিশ্বের সমস্ত মানুষ ও গোষ্ঠীর যাবতীয় সম্পর্ক, তাদের জীবন, কার্যকলাপ, ও চিন্তার প্রকৃতি নিয়ন্ত্রণকারী শক্তি নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্পর্কের আলোচনা “।
হার্টম্যান এর মতে,” আন্তর্জাতিক সম্পর্ক হল বিভিন্ন রাষ্ট্রের জাতীয় স্বার্থের সামঞ্জস্য বিধানের প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা“।
আন্তর্জাতিক সম্পর্কের বিকাশের ধারা:
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক একটি শাস্ত্র হিসাবে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে বিকাশ লাভ করলেও প্রাচীনকাল থেকেই এই সম্পর্ক নিয়ে চিন্তাভাবনা শুরু হয়।
১) প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পূর্বে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক: মধ্যযুগের অবসানে নবজাগরণের হাত ধরে আধুনিক যুগের সূচনা হয়েছিল। তার ফলে ভূ কেন্দ্রীয় রাষ্ট্র ব্যবস্থার উদ্ভব হয়েছে। এই আধুনিক রাষ্ট্র ব্যবস্থার উদ্ভবের সঙ্গে সঙ্গে আন্তর্জাতিক সম্পর্কের সূচনা হয়। ইংল্যান্ডের মাটিতে অষ্টাদশ শতাব্দীতে ঘটে যাওয়া শিল্প বিপ্লব আন্তর্জাতিক সম্পর্কের বিকাশের ধারণাকে অনেকটাই এগিয়ে নিয়ে গিয়েছিল।
২) প্রথম বিশ্বযুদ্ধ ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক: শিল্প বিপ্লবের পর বিশ্বের সবথেকে উল্লেখযোগ্য ঘটনা হলো প্রথম বিশ্বযুদ্ধ প্রথম বিশ্বযুদ্ধ তার পরবর্তী সময়ে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিকাশের একটি সুশৃঙ্খল আলোচনা দেখা যায়।
উল্লেখ্য এই সময় তৎকালীন মার্কিন রাষ্ট্রপতি উইলসনের চোদ্দ দফা প্রস্তাব বিশ্বের দরবারে উপস্থিতি হলে তা আন্তর্জাতিক সম্পর্কের নতুন অধ্যায় যোগ করে।
৩) তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক: দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ভয়াবহতা মানুষকে শান্তিকামী করে তোলে। যার ফলে বিশ্ব রাজনীতিতে আন্তর্জাতিক সম্পর্কের গুরুত্ব আরো বেড়ে যায়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে বিশ্বের শান্তিকামী দেশগুলি মিলে গড়ে তোলে সম্মিলিত জাতিপুঞ্জ। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ‘NATO’ জোটের বিরুদ্ধে সোভিয়েত ইউনিয়নের ‘WARSAW’ জোট। এর পাশাপাশি তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলি নিয়ে গড়ে ওঠে জোট নিরপেক্ষ আন্দোলন।
৪) দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তী পর্যায়ে ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক: দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তী পর্যায়ে ঠান্ডা লড়াই শুরু হয়। এই ঠান্ডা লড়াইয়ের ফলে তীব্র অস্থিরতা সৃষ্টি হয়। এর ফলে বিভিন্ন রাষ্ট্রের মধ্যে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
৫) একুশ শতক ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক: একুশ শতকের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা হলো সারা বিশ্বের প্রযুক্তিগত বিপ্লব ঘটে। ফলে গোটা বিশ্ব আজ সাধারণ মানুষের নাগালে। এই সময় বিভিন্ন দেশে আধুনিকতাবাদ, উপনিবেশিকতাবাদ, প্রভৃতি আন্তর্জাতিক সম্পর্কের বিকাশে ইতিবাচক ভূমিকা পালন করে।
Read more…